আজ ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বন্ধুর ডাকে আড্ডা দিতে গিয়ে অপহরণের শিকার অতঃপর মৃত্যু

বিশেষ প্রতিনিধি, সাভার (ঢাকা)
সাভার উপজেলার জামগড়া এলাকার যুবক হৃদয় (২০) কে অপহরণের দশ দিন পর, একটি পরিত্যক্ত ডোবা থেকে তার বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করেছে র‌্যাব। মুক্তিপণ না পেয়ে অপহরণকারীরা হত্যা ও লাশ গুম করেছিল বলে জানায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এ ঘটনায় মূল হোতাসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪। অপহরণের মূল হোতা ওই যুবকের এলাকার বন্ধু ছিল।
বৃহস্পতিবার (১৮ই মে) বিকেল তিনটার দিকে আটককৃত হত্যাকারী ও অপহরণকারীদের সাথে নিয়ে, আশুলিয়ার শ্রীপুর মুজারমিল এলাকার একটি ডোবা থেকে যুবক হৃদয়ের বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে র‌্যাব-৪।
এর আগে অপহরণকারীর মূল হোতা মানিকগঞ্জ জেলার ময়েজ হোসেন উরফে পরান(২২) ও সহযোগী বগুড়া জেলার মোঃ সুমন মিয়া উরফে বাপ্পি (২৩) কে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আটক করে র‌্যাব-৪। এ ঘটনায় আকাশ এবং শাহীন নামের আরো দুই আসামী পলাতক রয়েছে।
র‌্যাব-৪, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান জানান, গত ০৮ মে বিকালে সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানাধীন জামগড়া এলাকা হতে মোঃ হৃদয় (২০) প্রতিদিনের মতো বাসা থেকে বের হয়ে বাসায় না ফিরলে, বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে তার পরিবার। এসময় অজ্ঞাত পরিচয়ে ভিকটিমের ফোন থেকে পরিবারকে জানানো হয় হৃদয়কে জীবিত ফেরত পেতে ৫০,০০,০০০/-(পঞ্চাশ লক্ষ) টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। এ প্রেক্ষিতে হৃদয়ের পিতা আশুলিয়া থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করেন এবং র‌্যাব-৪ বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করেন।
অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব উক্ত ঘটনার ছায়া তদন্ত করে এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করে অপহরণের মূল পরিকল্পনাকারী সহ দুজনকে গ্রেফতার করা হয়।
লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান আরো বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামীরা তাদের অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। গ্রেফতারকৃত আসামী ও ঘটনার মূলহোতা ময়েজ হোসেন @পরান জানায় , ভিকটিম হৃদয় ও আসামী পরান একই এলাকার বাসিন্দা এবং পূর্ব পরিচিত হওয়ায় তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিলো। ভিকটিম হৃদয়ের বাবা স্থানীয় প্রভাবশালী ও আর্থিকভাবে স্বচ্ছল ব্যাক্তি। গ্রেফতারকৃত আসামী ও পলাতক অন্য দুই আসামির আর্থিক সংকটের কারণে দীর্ঘদিন ধরে ভিকটিম হৃদয়’কে অপহরণ করে মোটা অংকের টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করে আসছিলো। পূর্ব পরিকল্পনামতে গত ০৮ মে বিকেলে আসামীরা হৃদয়কে আড্ডার কথা বলে সুকৌশলে পলাতক আসামী আকাশের বাসায় নিয়ে যায়। পরে হৃদয়কে রশি দিয়ে বেঁধে তারই মোবাইল ফোন থেকে তার বাবাকে ফোন করে, মুক্তিপণ বাবদ ৫০,০০,০০০/-(পঞ্চাশ লক্ষ) টাকা দাবী করে। আসামী ময়েজ হোসেন @পরান জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় যে, দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরেও মুক্তিপনের টাকা না পেয়ে, হৃদয়ের গলায় রশি পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং বালিশ চাপা দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে তারা। সন্ধ্যায় অন্ধকারে ভিকটিমের লাশ বস্তায় করে সুকৌশলে রিকশাযোগে শ্রীপুর এলাকার একটি পরিত্যক্ত ডোবায় ফেলে দেয়া হয়। ঘটনার পরে আসামীরা আত্মগোপনের উদ্দেশ্যে এলাকা ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যায়।
উক্ত আসামীদ্বয়ের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানান এই র‌্যাব কর্মকর্ত।

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap